• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৯-৩-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:০৩
  • ১১৬ বার দেখা হয়েছে

যমুনার তীর সংরক্ষণ  কাজে কচ্ছপ গতি

যমুনার তীর সংরক্ষণ  কাজে কচ্ছপ গতি

ভবতোষ রায় মনা ►

ভাঙনের স্থায়ী সমাধানের জন্য ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারি থেকে সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দী ও হলদিয়া পর্যন্ত যমুনার ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জুলাই মাসে। আর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। কিন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।

গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর স্থায়ী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ চলছে ধীর গতিতে। প্রায় ১০ কিলোমিটার প্রকল্পের অধিকাংশ পয়েন্টে বন্ধ রয়েছে কাজ। আর যেসব পয়েন্টে কাজ চলছে তাও কচ্ছপ গতিতে। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আকষ্মিক বন্যায় ফসল ও আবাদি জমির ক্ষয়ক্ষতিসহ ব্যাপক ভাঙনের আশংকা করছে স্থানীয়রা। 

প্রকল্পের ১০ কিলোমিটার অংশে ৩৮টি প্যাকেজে ৩৮টি পয়েন্টে ৭৯৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরুর প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হলেও কিছু পয়েন্টে ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলা ছাড়া তেমন কোন কাজের অগ্রগতি করতে পারেনি ঠিকাদাররা।

বসতভিটা ও ফসলী জমি রক্ষায় প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারী গ্রামের জসিজল হক বলেন, অধিক্ংাশ পয়েন্টে শুধু জিও ব্যাগ ফেলে ও খোঁড়াখুঁড়ি করে কাজ বন্ধ রেখেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। সেসব জিও ব্যাগ এখনি নদীতে ধ্বসে পড়ছে। আর যে কয়টি পয়েন্টে ব্লকের কাজ চলছে তাও অত্যন্ত ধীর গতিতে ও নিম্মমানের। 
গজারিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া এলাকার আলমগীর হোসেন জানান, স্থানীয় বালি ও নিম্মমানের পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে এসব সিসি ব্লক। বিশেষ করে হলদিয়া ইউনিয়নের ৬ কিলোমিটার অংশের অবস্থা বেশি নাজুক। সেই সাথে বাঁধের নিচ থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে নির্মাণাধীন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধটিও। 

সাঘাটার হলদিয়া গ্রামের তাহের উদ্দিন বলেন, কবে নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চতা। ফলে আসন্ন বর্ষায় নদী ভাঙন ও আকষ্মিক বন্যায় ব্যাপক এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্ডল জানান, এই অবস্থায় কাজ চলমান থাকলে এই ইউনিয়নের বসবাসরত পরিবারগুলো নদীভাঙনের মুখে পড়বে। দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সুপারভাইজার আকমল হোসেন বলেন, আমরা ৯ ও ১০ নং সাইডে কাজ করছি। এখানে আমার সোলোপের কাজ করার পর বস্তা ফেলাবো এবং নদীর তলদেশেও বস্তা ফেলাবো। যখন সিসি ব্লক ফেলানো হবে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা আবু রায়হান তা গণনা করবেন। তিনি কাজের ধীরগতির বিষয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশা করি নদীশাসনের কাজ সম্পন্ন হবে।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজের মান ঠিক রাখতে ও গতি বাড়াতে ঠিকাদারদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং  আসন্ন বর্ষার আগেই ভাঙন মোকাবেলার কাজ করা হবে জানিয়ে, আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দেন সদ্য যোগদান করা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কর্মকর্তা। 
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়